২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত, রাজ্যের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা ইনঘাম, লিভিংস্টন, ইটন, জেনেসি, ওকল্যান্ড এবং ওয়েন কাউন্টিতে শক্তিশালী ওপিওয়েড কারফেন্টানিল ব্যবহারের ফলে ১১ জনের মৃত্যু শনাক্ত করেছেন/Detroit News
ল্যান্সিং, ১ জুলাই : মিশিগানের স্বাস্থ্য ও মানবসেবা বিভাগ সম্প্রতি এক সতর্কবার্তায় জানিয়েছে, রাজ্যের অনিয়ন্ত্রিত ওষুধ সরবরাহে অত্যন্ত বিপজ্জনক একটি সিন্থেটিক ওপিওয়েড, কারফেন্টানিল, পুনরায় দেখা দিয়েছে। এটি মরফিনের চেয়ে প্রায় ১০,০০০ গুণ এবং ফেন্টানাইলের চেয়ে ১০০ গুণ বেশি শক্তিশালী। কারফেন্টানিল মূলত বৃহৎ প্রাণীর জন্য পশুচিকিৎসায় ব্যবহারের উদ্দেশ্যে তৈরি হয়েছিল এবং মানুষের ব্যবহারের জন্য অনুমোদিত নয়। মিশিগান স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, গত পাঁচ বছর ধরে কারফেন্টানিল-সংশ্লিষ্ট মৃত্যুর হার কিছুটা কমে আসছিল, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি ইতিবাচক প্রবণতা ছিল। তবে এখন এই মারাত্মক মাদকের পুনরায় আবির্ভাব রাজ্যজুড়ে গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের তথ্যমতে, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ইনহাম, লিভিংস্টন, ইটন, জেনেসি, ওকল্যান্ড এবং ওয়েইন কাউন্টিতে কারফেন্টানিল সংশ্লিষ্ট ১১টি মৃত্যুর ঘটনা চিহ্নিত করা হয়েছে। রাজ্যের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ১০ জন আক্রান্ত ব্যক্তি কোকেনের জন্য ইতিবাচক পরীক্ষা দিয়েছেন এবং ৮টি ক্ষেত্রে ফেন্টানাইলও শনাক্ত হয়েছে।
মিশিগানের প্রধান চিকিৎসা নির্বাহী ডাঃ নাতাশা বাগদাসারিয়ান বলেন, “কারফেন্টানিল একটি অত্যন্ত শক্তিশালী এবং প্রাণঘাতী ওষুধ। আমরা অনিয়ন্ত্রিত ওষুধ ব্যবহারকারীদের ও তাদের প্রিয়জনদের ন্যালোক্সোন বহনের অনুরোধ করছি।” ন্যালোক্সোন হলো একটি নাসাল স্প্রে যা ওপিওয়েড ওভারডোজকে বিপরীত করতে পারে এবং জীবন বাঁচাতে পারে।
২০১৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত রাজ্যে কারফেন্টানিল সম্পর্কিত মৃত্যুর হার শূন্য বা খুবই কম থাকলেও, ২০২৩ সালের শেষদিকে ১৪টি মৃত্যু এবং ২০২৪ সালের প্রথমার্ধে ১১টি মৃত্যু আবার পরিস্থিতিকে ভয়াবহ করে তুলেছে। যদিও সামগ্রিকভাবে ২০২৩ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে মিশিগানে ওভারডোজ মৃত্যুর সংখ্যা ৩৪% কমে এসেছে (২৯৩১ থেকে ১৯২৭ জনে), তবুও কারফেন্টানিলের মতো বিষাক্ত উপাদানের পুনরাবির্ভাব উদ্বেগজনক।
মিশিগান অ্যাসোসিয়েশন অফ চিফস অফ পুলিশের পরিচালক রোনাল্ড ওয়াইলস বলেছেন যে, জননিরাপত্তা দিক থেকেও এটি এক বিরাট হুমকি। “এই ওষুধ কেবল ব্যবহারকারীদেরই নয়, বরং জরুরি সেবাদানকারীদের জন্যও জীবনঘাতী হয়ে উঠছে।” পুলিশের আহ্বান, সচেতনতা বৃদ্ধি, মাদক পাচার প্রতিরোধ, এবং জরুরি সেবার সঙ্গে জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমন্বয় এখন সময়ের দাবি। কারফেন্টানিলের মতো মারাত্মক মাদকের অনুপ্রবেশ প্রমাণ করে, মাদক নিয়ন্ত্রণে আমাদের প্রচেষ্টা এখনো যথেষ্ট নয়। এই মুহূর্তে প্রয়োজন, সতর্কতা, জনসচেতনতা, ও স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর কার্যকর সমন্বয়। ন্যায্য চিকিৎসা, প্রবল সচেতনতা ও সক্রিয় সামাজিক উদ্যোগই এই ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারে।
Source & Photo: http://detroitnews.com
নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan